ছালদার রহমান: সুবিধাবঞ্চিত নারী শিশুদের নিয়ে সরকার সাধারণ মানুষের করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন ৩০ টি সামাজিক সংগঠনসহ সাংবাদিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উঠে আসে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং রাজধানী শহরের বঞ্চিত পথশিশুদের কথা।

সেমিনারের প্রধান আলোচক সাবেক বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া স্বাধীনতার ৫০ বছরেও শিশুরা তাঁর সঠিক অধিকার পায়নি। শিশু অধিকার বাস্তবায়নে সকলের একযোগে কাজ করতে হবে।

প্রধান অতিথি সাবেক মানবাধিকার চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, সরকার পথশিশুদের নিয়ে কাজ করলেও তাঁর সুফল হচ্ছে না।

সেমিনারে বিশেষ বক্তা গ্লোবাল টেলিভিশনের অ্যসাইনমেন্ট এডিটর ও ক্রাইম চীফ আনিসুর রহমান সাব্বির বলেন, ২০২৩ সালে পথশিশুদের রক্ষায় সরকারসহ সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার উচিত। সরকারের যে বাজেট ঘোষণা করেন সেখানে যদি পথশিশুদের জন্য বাজেট বরাদ্দ থাকলে দেশের অসহায় শিশুরা বঞ্চিত হবে না। এতে দেখা যাবে এই পথশিশুরা একসময়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে আলোকিত করবে।

সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মোহাম্মাদ আলী। তিনি বলেন,

১. সকল প্রকার শিশু নির্যাতন বন্ধ, অবহেলা, শোষণ ও পাচার বন্ধে “শিশু ইউনিট পুলিশ” নামে শাখা চালু করতে হবে।

২. প্রত্যেকটি জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে শিশু অধিকার কল্যাণ তহবিল গঠন করে প্রান্তিক পর্যায়ে সকল সুবিধা বঞ্চিত শিশুর ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে।

৩. সুবিধা বঞ্চিত শিশুর জন্য সুষম খাবার,স্বাস্থ্য, পোশাক, নিরাপদ বাসস্থান, বিনোদন ও আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. ১২-১৬ বয়সী সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বয়স অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

৫. টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল শিশুর সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার জন্য আলাদা ইউনিট চালু করতে হবে।
৬. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুর তালিকা প্রণয়ন করে প্রত্যেকটি উপজেলায় পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. শিশুর আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেকটি কোর্টে একজন বিজ্ঞ উকিলকে সরকারিভাবে আইনি পরামর্শের জন্য নিয়োগ দিতে হবে।

আয়োজিত সেমিনারে বাংলাদেশ গণমাধ্যমকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আল-আমিন এম তাওহীদ বলেন, তৃণমূলে সচেতনতা প্রয়োজন। নৈতিক ও পারিবারিক অবক্ষয়ের কারণে আজ শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম জাফরুল্লাহ সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। প্রত্যাশার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেজবাউদ্দীন মোঃ জীবন চৌধুরী, সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদের পরিচালক অধ্যক্ষ নাদিয়া নূর তনু, মেডিসিন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ,গবেষক ও সমন্বয়ক সবুজ আন্দোলন গবেষণা পরিষদের সদস্য ডাক্তার সাকিরা নোভা, বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান রোটারিয়ান এম আজিজ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ঈসা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়ন সংস্থার মহাসচিব মোঃ নুরুল কবির, বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আরফান চৌধুরী আপেল, বঞ্চিত নারী ও শিশু অদ্ভুত ফাউন্ডেশন ঢাকা জেলা সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম, সহসভাপতি, আসাদ আলী রাজু, প্রচার সম্পাদক মোঃ ফরিদ গাজী, আঃ লতিফ আহমেদ,জেসিফা গ্রুপের পরিচালক ফাতেমা মিরা প্রমূখ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি ও সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. নাঈমা হক।

(এমআই)