1. newsbanglapride24@gmail.com : banglapride24 : bangla pride
  2. jmitsolution24@gmail.com : support : Support Team
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
সবাইকে একসাথে নিয়ে হিট মোকাবিলা করবো : চিফ হিট অফিসার শেখ রাসেল অনূর্ধ্ব-১৫ ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবলের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বর্ণযুগ উপভোগ করছেন চাঁদাবাজ ও ভূমিদূস্যদের হাত থেকে রক্ষা পেতে রাজমহল রিয়েল এস্টেটের পরিচালক সেলিনার সংবাদ সম্মেলন ঢাকায় ঈদের আগেই ঈদের নামাজ পড়লেন অনেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঈদ উপহার নিয়ে অসহায়দের পাশে ডেইজি রাইট টক বাংলাদেশের আয়োজনে আলোচনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাইট টক বাংলাদেশের আয়োজনে আলোচনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত দেশজুড়ে পাওয়া যাচ্ছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ ঈদে ফাঁকা ঢাকা পাহাড়া দিবে পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার

ভাষার মাসে যত আদর, তবে শিক্ষকরা না জানলে শেখাবে কে?

  • Update Time : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মতামত ডেস্ক: ভাষার সূত্রপাত থেকেই আমাদের স্বাধীনতা। উর্দু নয়, চাই মায়ের ভাষায় কথা বলতে। এ ভাষায় একটু কথা বলতেই সালাম, রফিক, শফিক, জব্বার আরো কত নাম। দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করলেন তৎকালীন ঢাকার রাজপথ। এই আন্দোলনকে ঘিরে অনেক পিতা-মাতা হারিয়েছেন তাদের আদরের লালিত-পালিত সন্তান। তারপরও অধিকার আদায়, নিজেদের অবস্থান থেকে কেউ ফেরাতে বা সরাতেও পারেনি। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বুলেটের আঘাতেও পারেনি বাংলার মাটিতে উর্দুকে প্রতিষ্ঠিত করতে। শেষ পর্যন্ত মায়ের ভাষাই মায়ের কাছে আপন হলো সন্তানের কাছে। তবে বাঙালি জাতি কি আজও পেরেছে ভাষার সম্মান ও মর্যাদা ধরে রাখতে? সেই প্রশ্নই এখন সর্বত্র।

সেই রক্ত আর ভাষা আজকে কেমন আছে কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে হয়তো ভাষা শহীদরা জানেন না। তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলা ভাষাকে জাতি কতটা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় রেখেছেন সেই প্রেক্ষপট জানতে হবে।
শুরু করা যাক রবীন্দ্রনাথের উদ্ধৃতি দিয়ে -তিন বলেছেন, ‘আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি।’ তারপর ইংরেজি শেখার পত্তন’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আমার ছেলেবেলা)। মাইকেল মধুসূদন দত্তের বঙ্গভাষা কবিতায় তুলে ধরেছেন নিজ ভাষার অবহেলার পরিনামও।
কথায় আছে, ‘মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি’। সারাবছর অবহেলায় থাকে আর ১টি মাসে যত জল্পনা কল্পনা আমাদের মধ্যে জেগে ওঠে বা চেতনা চলে আসে। এমনকি ভাষা শহীদদের সমাধি ও শ্রদ্ধাস্থলও ফেব্রুয়ারির পর প্রেম-প্রীতিস্থলে পরিনত হয়েছে। প্রায় সময়ই চোখে পড়ে শহীদ মিনারে মাদক সেবন এবং বিনোদনেরও আড্ডা চলে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মিনার তৈরি করেছে সেটিও চরম অবহেলা অযত্নে।
‘স্বাধীনতা অর্জন’ করেছি যতটা বলা সহজ তার চেয়ে কঠিন হলো স্বাধীনতা রক্ষা করার কাজ। বারো মাসের ১১ মাসে খোঁজ নেই, আর ১টি মাসে আমাদের ভাষার জন্য নানা ধরনের চিন্তা-চেতনা চলে আসে। শুধু এটাই নয়, এখন সমাজের কেউ আঞ্চলিক ভাষা কিংবা বাংলার যেকোন ভাষায় কথা বললে সেটাকে অসামাজিক বলে থাকেন একশ্রেণির মানুষ।। আর যেসব মানুষ বাংলিশে কথা বলে তাকে সামাজিক এবং বড় পন্ডিত বলে এই সমাজ মনে করে থাকেন। তাহলে এবার ভেবে দেখুন আমাদের কতটা ভাষার বিষয়ে অবনতি হয়েছে!
এসবই  সীমাবদ্ধ  নয়। ভাষার মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের পাতায় দেখা গেল নতুন প্রজন্ম জানে না ভাষা দিবস কবে এবং কত সালে ঘটনাটি ঘটেছে! সাংবাদিক বন্ধুরা প্রশ্ন করছে আর প্রজন্ম তাকিয়ে শুধু হাসছে। তখন ভেবেছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরাই জানেন দেশ ও রাষ্ট্রের ইতিহাস সম্পর্কে। তারা যদি জানতো তাহলে এ প্রজন্মকে কিছুটা হলেও শেখাতে পারত। নিজে না জানলে অন্যকে কিভাবে শেখাবে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর দিকে দিয়ে উন্নতি হলেও শিক্ষা আর শিক্ষকদের আজও উন্নতি হয়নি বরং অবনতি হয়েছে। আজতে নতুন প্রজন্ম তার দেশের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণাটুকুও নেই। কিছুই শিখতে পারছে না এ প্রজন্ম। শুধু শিক্ষকরাই নয়, এ দায় থেকে অভিভাবকরাও এড়িয়ে যেতে পারেন না। সন্তান সুশিক্ষিত না করলে পারলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। 
একসময়ে দেখা গেছে দেশের শিক্ষাপ্রিতষ্ঠানগুলো সকালে ক্লাস শুরুর আধাঘন্টা আগে সকল শিক্ষার্থীকে শিক্ষকরা মাঠে নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ, ধর্মীয়, শপথ বাক্যপাঠসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা ছিলোা। শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকরাও এসব শিখতেন এবং জাতীয় সঙ্গীতও গাইতেন। যা থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশ ও ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পারতেন। সেসব এখন আর চোখে পড়ে না, একটি বিদ্যালয়েও পরিবেশন হচ্ছে না জাতীয় সঙ্গীত। মাদরাসার কথা দুরে থাক স্কুল-কলেজেও হচ্ছে না এসবের কিছুই। তাই শিক্ষক সমাজ যদি না জানে তাহলে শেখাবে কে? সমাজের প্রতিটা জায়গা দূর্নীতি অনিয়মে টালমাটাল। শিক্ষায় যদি অনিয়ম দূর্নীতি হয় তাহলে পুরো জাতিই দূর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
বর্তমান প্রজন্ম শিক্ষা নিয়ে কিভাবে অগ্রসর হচ্ছে তা ভবিষ্যতে এটার প্রভাব পড়বে। একদিকে ইন্টারনেট যেমন কিছু ভাল শেখাচ্ছে তার চেয়ে বেশি নতুন প্রজন্মের মগজ ধোলাই করছে। টিকটক থেকে শুরু করে অসংখ্য এমন বাজে অ্যাপসে এই প্রজন্মের মেধা শক্তি হাবুডুবু খাচ্ছে। ইতিহাস আর স্বাধীনতা সম্পর্কে ধারণা জানবে কিভাবে নেট দুনিয়া প্রজন্মকে বিলীন করে দিচ্ছে। এটির অপ-ব্যবহার রোধে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন জরুরি হয়ে পড়ছে। একটা জাতিকে এই ধরেনর অ্যাপস মেধা শূন্য করে দিতে পারে।
এছাড়াও নতুন প্রজন্ম বইয়ের পাতা থেকে অনেকটা দুরে চলে গেছে। সারাদিন নেট আর ফেসবুকসহ নানা অ্যাপসের মধ্যে নিমজ্জিত। বই খোলার সময়টুকুও আজ অনলাইন গেমসসহ নানা অ্যাপসে আসক্ত। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, নইলে এই প্রজন্ম একসময়ে শেষ হয়ে যাবে। দেশকে এগিয়ে নেয়া তো দুরের কথা আরো একধাপ পেছনে নিবে। বইমেলায় বিক্রির চেয়ে দর্শনার্থী বেশি। গত ১ যুগ আগেও ব্যাপক বই বিক্রি হয়েছে অথচ সেই তুলনায় বহুগুণ বাড়ার কথা। তবে বই বিক্রি বাড়েনি আরো কমেছে সংখ্যা।
দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাগজপত্র লেখা সবকিছুই ইংরেজি চলছে। ব্যাংকিং খাতে বাংলা তো দুরের কথা সবই যেন ইংরেজি ভাষার সমাহার। এমনকি দেশের বিভিন্ন খাবার হোটেল-মোটেলের নামটি এখন ইংরেজি হয়ে যাচ্ছে। বাংলাকে বিদায় জানিয়ে ইংরেজিকে আপন করে নিচ্ছে। যদি এমনটাই প্রতিনিয়ত হতে থাকে তাহলে এই ভাষার জন্য এতো রক্ত দেয়ার কি প্রয়োজম ছিল? যে জাতি সভ্য নয় সে জাতি সভ্য দেশ কিভাবে গড়ে তুলবে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামটাও যেন এখন ইংরেজি হয়ে যাচ্ছে।
ভাষা আন্দোলনের সাত দশক ও স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে গেছে দেশ ও জাতি। তবে মাতৃভাষার মর্যাদা বাড়েনি বরং আগের চেয়ে সম্মান আরো বিলীন হয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগীতার এই যুগে ভাষা ও সংস্কৃতির আদান-প্রদানের প্রয়োজনীয়তা দ্বিধাহীন সেটা অস্বীকার করার করা যাবো  না। তবে আগে নিজের ভাষা শিখে তারপর অন্য ভাষাকে সবার প্রাধান্য দিতে হবে। নিত্যনতুনের ভীড়ে প্রাচীন ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায় সেদিকেও এই সমাজ ও প্রজন্মের লক্ষ্য রাখতে হবে।
আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিশ্বনাগরিক হয়ে উঠতে হবে। তাই বলে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি এবং জাতীয়তা মুূল্যবোধকে অবজ্ঞা, অবহেলা করে নয়। দেশপ্রেমিক নাগরিক হলেই একটি সুন্দর দেশ ও সমাজ গঠন করতে পারবে। চিন্তা-চেতনায় রাখতে হবে সবার ওপরে আমার দেশ, আমার ভাষা ও সংস্কৃতি। এটা রক্ষা করার দায়িত্ব প্রত্যেকটা নাগরিকের। 
 
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা গোটা বিশ্বে পালিত হবে। এই ভাষাপ্রেম এখন ফেব্রুয়ারি মাসই সীমাবদ্ধ থাকছে। একুশের আনুষ্ঠানিকতার অলংকার হয়ে উঠছে শুধু ১টি মাসে। বছরের পর বছর আর ১১ মাসের দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসকে আমরা বানিয়েছি ভাষার বছর।
লেখক :  আল-আমিন এম তাওহীদ
সাংবাদিক ও সংগঠক।
(এসএম)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022
Design & Developed By : JM IT SOLUTION