ডেস্ক, রিপোর্ট: কথায় আছে পুরান চালে ভাত বড় না হলে নতুন চালে ভাত বড় হয় না। আর এই প্রবাদের এখন বিপরীতে রয়েছে নতুন চালে ভাত বড় হয়। রাজধানী শহরের আদি চ্যানেল হচ্ছে পুরান ঢাকা। সবার কাছে এই জায়গা খুব পরিচিত এবং মুখস্ত। প্রাচীন ইতিহাস যদি ধরেই রাখা না যায়, তাহলে নিত্যনতুন গড়ে তোলার ইতিহাসের কোন মূল্য নেই।
রাজধানী শহর ঢাকার বিভিন্ন এলাকার চিত্র বলে গেলেও প্রাচীন শহর গুলিস্তান, বকশিবাজার, চকবাজার, বংশাল, ওয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এলাকার পরিবর্তন বা রুপ ফিরেনি। এই স্থানে আজ উন্নত রুপের ঝলক থাকার কথা ছিলো। হয়তো আদি ঢাকার ভাগ্য খারাপ না হয়, মানুষ ভাল না বলেই আজ দুর্ভাগ্য
বিশ্বের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার প্রাচীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই দুই বহৎ প্রতিষ্ঠানের আশে-পাশে অবস্থিত পুরান ঢাকা , বংশাল, চকবাজার। এই এলাকায় অসংখ্য শিক্ষার্থীদের বসবাস যেহেতু তাদের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থিত রয়েছে।
মাঝে মধ্যে ঢাবির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে নানা ধরনের আন্দোলন চোখে পড়ে। তারা পরিবেশ, সামাজিকসহ আন্দোলন করে থাকেন। তবে নোংরা পরিবেশ আর দুর্গন্ধযুক্ত এলাকাই তাদের নিত্যসঙ্গী যে কথা ভুলে আজ তারা ভুলে গেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ঢাবি এর পিছনে নাজিমউদ্দিন সড়ক, মাজেদ সরদার সড়ক,চানখারপুল, নবাবকাটা, চকবাজার, বংশাল সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার আর সড়কের পাশে অবস্থিত ড্রেনের চিত্র দেখে মটেও বিচলিত হলাম নাহ। কারণ মানুষ বাস্তবতাকে উপলদ্ধি না করে সেলিব্রিটি হওয়ার ব্যস্ততায় আজ এসব নিয়ে কথা বলা ভূলে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চোখে নিশ্চয়ই এই চিত্রগুলো বার বার পড়লেও তবে মন টানেনি। সমস্যা হলো ওখানে মিডিয়া নেই।
আজ শুক্রবার ( ১৪ অক্টোবর) দুপুরে নাজিমউদ্দিন সড়ক দিয়ে এ রোডের বড় জামে মসজিদে নামাজ আদায় করলাম। মসজিদে গেলাম পায়ে হেঁটে। আর প্রায় ২ কিলোমিটার রাাস্তাসহ চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম আশে পাশের পরিবেশ এবং মানুষগুলো কিভাবে বসবাস করেন। কিন্তু আমি পরিবেশ দেখবো কি দুর্গন্ধে নিঃশ্বাসই ফেলতে পারছি না এমন নোংরা পরিবেশ।
চোখে পড়লো সড়কের পাশে ড্রেনগুলোর চিত্র। মানুষ মলমূত্র ত্যাগ করে সেসবও চোখে পড়লো। পাশাপশি যে পরিমানে ড্রেনগুলোতে মশার উৎপত্তি দেখলাম তাতে মনে হলো ঢাকা মেডিকেলে শুধু ডেঙ্গু চিকিৎসা নিতে দুর থেকে রোগী আসবে না, মেডিকেলের আশে পাশের মানুষগুলোর চিকিৎসা দিতে গিয়েই বেডগুলো ভরপুর। এখানে অসংখ্য মানুষের বসবাস, নেই নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পাশে অসংখ্য শিশুর পরিবারের বসবাস পাশে দুটি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। চানখারপুল সরকারি প্রাথমিক ও নবাবকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি কলেজ রয়েছে। সড়কের দুই পাশে অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। খাবার হোটেল গুলোও পিছিয়ে নেই। কিন্তু পরিবেশটা দেখে নিজেকে বাকরুদ্ধ মনে হলো।
এই পরিবেশ কি এখনো বাংলাদেশে আছে? আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশে এমনও পরিবেশ আর ড্রেন কি কোথাও আছে? সিটি করপোরেশন বাসা বাড়ির একদিনের পানিতে হামলা করছে তবে রোডের পাশে ড্রেনের পরিবেশটা কি একবারো সিটি কর্তৃপক্ষ দেখেছেন অথবা হামলা করেছেন? এসব অবস্থা কি সিটির চোখে পড়েনি? সমস্ত সড়কের ওপরে বাসা বাড়ির ময়লাগুলো পড়ে আছে। মনে হয় সিটির পরিছন্নরা আসছে কিংবা কাজ ফাকিঁ দিয়েছে অথবা হতে পারে সিটির জনবল সংকট।
তবে এসব লিখে আর বলে লাভ কি? দেশের জনপ্রতিনিধিদের সন্তানগুলো বিদেশের অপরুপের মাটিতে বড় হয় এবং সেখানেই পড়া লেখা করেন। তাদের সন্তানগুলো যদি এই ময়লা-নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খোলা ড্রেনের পাশের স্কুলে পড়া লেখা করতো হয়তো তখন জনপ্রতিনিধিদের বিবেকে নাড়া দিতো। এখন আর দিবে না।তাদের পরিবার আর সন্তান ঠিকই বিলাসিতায় আছেন।
দেশের জনপ্রতিনিধিরা যদি পায়ে হেঁটে এলাকাগুলো পরিদর্শন করতে তাহলে নিশ্চয়ই মানুষের দুঃখ কষ্ট লাগব হতো। এরপর এসব এলাকায় বৃষ্টি হলে পানি উঠে যায় আর এই দুর্গন্ধ ড্রেনের ময়লা সড়কে ভাসে। সেই সড়ক দিয়ে অসংখ্য মানুষ চলাফেরা করছেন।
ড্রেনগুলোর চিত্র দেখে মনে হলো ড্রেনও অসহায় যদি কথা বলতে পারতো তাহলে বলতো ও সিটি করপোরেশন আমাকে উন্নত করো। কারণ আমি গোটা পরিবেশ এবং জনসাধারণের জীবন নিয়ে খেলা করছি। এবার ওহে দয়া করো। ছোট ছোট শিশুরা আজও এই পরিবেশে ভাল নেই।
যদি দয়া হয় সিটি করপোরেশনের নতুন ড্রেন তৈরী করে বাসিন্দারদের মুখে হাসি ফুটাবেন যেহেতু জাতীয় নির্বাচন সামনে । আর মানুষের হৃদয়ে স্বস্তির বাশিঁ বাজান। কিভাবে মানুষ ভাল থাকতে পারেন চিন্তা শক্তি হোক সমতায় সবার মনে।
(লেখক -আল-আমিন এম তাওহীদ, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ গণমাধ্যমকর্মী অ্যাসোসিয়েশন)
লেখাটুকু তার ফেসবুক থেকে সংগৃহিতী
(এনএম)
Leave a Reply