আল আমিন এম তাওহীদ, সিনিয়র রিপোর্টার : দেশের ইঞ্জিনিয়ার্সদের পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থার কাজ কারিগরি বিষয় সংশ্লিষ্ট বিধায় প্রকৌশল সংস্থাসমূহের চেয়ারম্যান, কোম্পানীগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বোপরি সংস্থাসমূহের শীর্ষপদগুলোতে প্রকৌশলীর অভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, রাজউক ও বিসিআইসি-এর শীর্ষ পদে ইতোপূর্বে প্রকৌশলী থাকলেও বর্তমানে অপ্রকৌশলীকে পদায়ন করা হয়েছে। তাই প্রকৌশল সংস্থা এবং কোম্পানীসমূহে সার্বিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থা, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন কোম্পানীসমূহ, পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের আওতাধীন কোম্পানীসমূহ এবং মেট্রোরেল সহ অন্যান্য প্রকৌশল নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ সহ সর্বোপরি শীর্ষপদগুলোতে অপ্রকৌশলী ব্যক্তিদের স্থলে প্রকৌশলীদের পদায়ন করতে হবে।
সোমবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ৭৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আইইবির মুখ্য পাত্র সম্মানি সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এস. এম. মঞ্জুরুল হক মঞ্জু লিখিত বক্তব্যে এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর এমপি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন শিবলু, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার কাজী খায়রুল বাশার, সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তী এবং ইঞ্জিনিয়ার রনক আহসানসহ আইইবির বিভিন্ন বিভাগ, কেন্দ্র এবং উপকেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ।
দেশের প্রকৌশল পেশার মানোন্নয়নে আইইবি সাংবাদিকদের সামনে কয়েকটি দাবি আইইবি তুলে ধরেন।
প্রকৌশলীদের পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করা এবং দেশের অধিকাংশ সংস্থায় কর্মরত প্রকৌশলীগণ ভারপ্রাপ্ত, অতিরিক্ত দায়িত্ব, চলতি দায়িত্ব পালনে ভারাক্রান্ত। পদ শূণ্য থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হতে পদোন্নতি না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চলতি দায়িত্ব, অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের অনুমোদিত পদের অধিক পদে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। পক্ষান্তরে, একইপদে ২০ বছরের অধিক চাকুরীকালে পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রকৌশল কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। ফলশ্রুতিতে সংস্থাগুলোর কর্মক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রকৌশলীগণ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রকৌশল সংস্থাসমূহে কর্মরত প্রকৌশলীদের ফিডার পদে চাকুরীর শর্ত পূর্ণ হওয়ার পর পরবর্তী ধাপের পদোন্নতি বা গ্রেড প্রদান করা হলে প্রকৌশলীগণ একদিকে যেমন ন্যায্য অধিকার প্রাপ্ত হবেন অন্যদিকে তাদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে, দেশের উন্নয়ন তড়ান্বিত হবে। প্রকৌশল সংস্থাসমূহের অর্গানোগ্রাম যুগোপযোগী করা হলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এছাড়াও পলিটেকনিক শিক্ষকদের প্রধান দাবী বর্তমান চাকুরী কাঠামো- জুনিয়র ইনস্ট্রাকটর-ইনস্ট্রাকটর-চীফ ইনস্ট্রাকটর- উপাধ্যক্ষ- অধ্যক্ষ পরিবর্তন করে প্রভাষক অধ্যাপক চাকুরী কাঠামো বাস্তবায়ন করা। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি লংঘন করে মহাপরিচালকসহ পরিচালকের সকল পদগুলো অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাগণ দখল করে নিয়েছে, অকারিগরি লোক দ্বারা কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাদেরকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিয়োগ বিধি মোতাবেক কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দ্বারা উক্ত পদগুলো পূরণের দাবী জানাচ্ছি।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটি নানা কর্মসূচি পালন করবে। আইইবির সদর দফতরে সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা ও আইইবি পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সকাল সাড়ে টায় কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে৷ আইইবির ১৮ টি কেন্দ্র, ৩৪ টি উপকেন্দ্র ও ১৪ টি ওভারসীজ চ্যাপ্টারে একসময়ে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
(এসএম)
Leave a Reply